Article: http://bn.banglapedia.org/index.php?title=%E0%A6%AB%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%B0%E0%A6%BF_%E0%A6%86%E0%A6%87%E0%A6%A8_%E0%A7%A7%E0%A7%AF%E0%A7%AC%E0%A7%AB_(%E0%A7%A7%E0%A7%AF%E0%A7%A9%E0%A7%AA-%E0%A6%8F%E0%A6%B0_%E0%A7%A8%E0%A7%AB%E0%A6%A8%E0%A6%82_%E0%A6%86%E0%A6%87%E0%A6%A8)
ফ্যাক্টরি আইন ১৯৬৫ (১৯৩৪-এর ২৫নং আইন) হলো কারখানায় শ্রমিক নিয়োগ, তাদের মজুরি এবং কাজের পরিবেশ, যথা স্বাস্থ্যকর ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কর্মস্থল, স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপত্তা, কল্যাণমূলক ব্যবস্থা, কর্মঘণ্টা, সাপ্তাহিক ও অন্যান্য সব ধরনের ছুটির সুযোগ এবং আইনভঙ্গের কারণে মালিক ও শ্রমিক উভয়ের জন্যই শাস্তি ও জরিমানা ইত্যাদি সংক্রান্ত আইন।
ইতিহাস
পূর্ব পাকিস্তান ফ্যাক্টরি আইন ১৯৬৫ (১৯৬৫ সালের পূর্ব পাকিস্তান আইন নং ৪) নামক এই আইন ১৯৬৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকা গেজেট এক্সট্রা অর্ডিনারিতে প্রকাশ করা হয়। স্বাধীনতার পরে এই আইন বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক আইনটি গ্রহণ করা হয়। তখন সারা বাংলাদেশে এই আইন কার্যকর বলে কার্যকর বলে ঘষোণা দেওয়া হয়। আইনটি এখনো কার্যকর রয়েছে।
বিবরণ
আইনটিতে মোট ১১টি অধ্যায় এবং ১১৬টি বিভাগ রয়েছে। এখানে তরুণ, বয়স্ক, শিশু, কর্মদিবস, কারখানা, যন্ত্র এবং সরঞ্জাম, উৎপাদনের প্রক্রিয়া, মুখ্য চালিকা শক্তি, কাজের সময়, শ্রমিক বা কর্মচারীর মজুরি ইত্যাদি বিষয়ের সুস্পষ্ট সজ্ঞা এবং ব্যাখ্যা রয়েছে। সরকারের এই আইন ব্যবহারের ক্ষমতা। ক্ষেত্রবিশেষে যে প্রতিষ্ঠানগুলো এটি থেকে অব্যাহতি পেতে পারে তার বর্ণরা প্রদান করা হয়েছে এ আইনে। এই আননানুযায়ী, সরকার কোনো ফ্যাক্টরি চালু করার পূর্বে প্রধান পরিদর্শকেরকিাছে বিজ্ঞপ্তি প্রেরণ করতে পারে। কোনো কারখানা প্রতিষ্ঠা করার পূর্বে প্রধান পরিদর্শকের কাছ থেকে কারখানাটির জন্য প্রণিত পরিকল্পণা ও পরিকল্পণাটির অনুমোদন প্রয়োজন হয়। এর জন্য অনুমোদন দত্র এবং নির্ধারিত হারে নিবন্ধন ফি প্রদান করতে হয়। নির্দিষ্ট ঋতুতে ফ্যাক্টরিটরে কর্মদিবস অনুযায়ী সেটিকে মৌসূমী কারখানা হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হতে পারে।
সরকার কর্তৃক প্রধান পরিদর্শক, পরিদর্শক এবং সনদ প্রদানকারী সার্জনের নিয়োগের নিয়মাবলী এবং শ্রমিকদের কর্মক্ষমতা যাচাই কররি পদ্ধতি এই আইনে লিপিবদ্ধ আছে।
কারখানার পরিবেশ সংক্রান্ত নীতিমালা
ফ্যাক্টরি আইন অনুযায়ী, প্রতিটি কারখানা এমনভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে যাতে সেটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে। এই আইন অনুযায়ী, কারখানার আশপাশের নর্দমার পচা দুর্গন্ধ থাকতে পারবে না। এছাড়াও কারখানার পরিবেশ নোংরা করার মতো কোনো বস্ত্ত না থাকতে পারবে না। প্রতিটি কারখানায় ময়লা ও বর্জ্য নির্গমনের পথ থাকতে আবশ্যকীয়। ধুলা ও ধোঁয়া পরিষ্কার করার ব্যবস্থা থাকতে হেবে। প্ররত্যক ঘরে বাতাস আসা-যাওয়া এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা থাকতে হবে। ফ্যাক্টরি আইনে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, কোম্পানির শ্রমিক-কর্মচারীদের নিরাপত্তার স্বার্থে আগুন লাগলে সহজে বাহিরে যাওয়ার পথ এবং দূর্ঘটনাপ্রবণ বলকব্জার চারদিকে নিরাপত্ত বেষ্টনী থাকতে হবে। ক্রেনসহ ভারী মালামাল উত্তোলন করার যন্ত্র নিয়ন্ত্রণের কলকব্জা খুবই ভালোভাবে নির্মিত হওয়া আবশ্যক। এগুলো যেন সহজে অকেজ না হয়ে অথবা এগুলো যেন যেন কোনো দূর্ঘটনার কারণে না পরিণত হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। অনুরূপভাবে, ফ্যাক্টরির মেঝে বা প্রাঙ্গণে খানাখন্দক থেকে যাতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে তাই সেগুলোকে সুচারুভাবে আচ্ছাদিত করে রাখতে হবে। যে ক্ষেত্রে প্রয়োজন সেক্ষেত্রে শ্রমিকদের চোখ রক্ষা করতে কালো চশমা বা যথাযথভাবে তৈরি চোখের ঢাকনা সরবরাহ করতে হবে। প্রতিটি কারখানায় টয়লেট, গোসল এবং প্রাথমিক চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সকল উপকরণ ও ঔষধপত্রের সুব্যবস্থা থাকতে হবে। কেন্টিন, বিশ্রাম কক্ষ ও শিশুদের কক্ষগুলি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে এবং কারখানায় সংখ্যা ৫০০ এর বেশি শ্রমিক বা কর্মচারী থাকলে সেগুলোতে যথেষ্ট পরিমাণ সমাজকল্যাণ কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে হবে।
এ আইনে বলা হয়েছে, যে একজন প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিককে সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টার চেয়ে বেশি সময় কাজে নিয়োজিত করে রাখা যাবে না। বিশেষভাবে নির্দেশিত না হলে শ্রমিক-কর্মীদের সাপ্তাহিক ছুটির দিনে কাজে নিয়জিত রাখা যাবে না, কাজ থেকে অব্যাহতি দিতে হবে, তবে বিকল্প ছুটির ব্যবস্থা রেখে বাৎসরিক বিভিন্ন ছুটিতে তাদের কাজ করানো যাবে। এ আইনে, দৈনিক কর্মঘণ্টা, বিশ্রাম বা খাবারের জন্য বিরতি, কাজের সময় বণ্টন, রাতের শিফট বা একাধিক শিফটে কাজ, অতিরিক্ত কর্মঘণ্টা কাজের জন্য বাড়তি মজুরি, একসঙ্গে একাধিক চাকরিতে নিয়োগের ওপর নিষেধাজ্ঞা, কাজের মেয়াদ সংক্রান্ত নোটিশ এবং প্রাপ্ত বয়স্ক শ্রমিকদের নিবন্ধনের বিষয়ও বিস্তৃতভাবে বর্ণিত রয়েছে। এছাড়াও এ আইনে কারখানায় কোন ধরনের কাজ বিপজ্জনক সে সম্পর্কেও ধারণা দেওয়া হয়েছে এবং এবং বিশেষ কিছু দুর্ঘটনা, বিপজ্জনক পরিস্থিতি ও বেশকিছু রোগব্যাধি সম্পর্কে এ আইনানুযায়ী নোটিশ প্রদানের নির্দেশ আছে।
বয়স সংক্রান্ত
এই আইনানুযায়ী, ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের কারখানায় নিয়োগ করা নিষিদ্ধ এবং কমবয়সী কিশোরদের, কারখানায় নিয়োগ দিতে হলে তারা যে কর্মসক্ষম সেই সংক্রান্ত একটি সনদপত্র প্রয়্জেন হয়। এ কিশোরদের জন্য কর্মসময় হচ্ছে দিনে সর্বোচ্চ পাঁচ ঘণ্টা এবং সন্ধ্যা ৭টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত সময়ে তাদের কোনোভাবেই কাজে নিযুক্ত করা যাবে না। এ ধরনের প্রতিটি কারখানায় কিশোরদের কর্মসময় সংক্রান্ত তালিকা টাঙানো থাকতে হবে এবং তাদের একটি রেজিস্ট্রারও সংরক্ষণ করতে হবে। প্রয়োজন হলে কারখানাগুলোর পরিদর্শক কিশোরদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে পারেন।
আইনের বিভিন্ন অংশে থাকা শর্ত এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী শ্রমিকদের নির্দিষ্ট কয়েক দিনের জন্য বার্ষিক সবেতন ছুটি গ্রহণের অধিকার রয়েছে।তারা উৎসব উপলক্ষে, নৈমিত্তিক এবং চিকিৎসাজনিত ছুটি পেতে পারে, তাছাড়াও তারা এছাড়াও শ্রমিকরা বিনা বেতনে কিছু ছুটিও পেতে পারে। শাসন বিভাগকে শ্রমিকদের ছুটি-সংক্রান্ত সকল নিয়মাবলি প্রণয়নের অধিকার প্রদান করা হয়েছে।
শাস্তি ও জরিমানা
ক্ষেত্রবিশেষে, এই আইনে নিয়োগদাতাদের শাস্তি ও জরিমানার বিধি আছে যেমন, ফ্যাক্টরি পরিদর্শকের কাজে বাধা দিলে, ভুল বা ইচ্ছাকৃতভাবে সংকুচিত বা বিকৃত তথ্য দিলে এবং আইন ভেঙে শিশুশ্রমিক নিয়োগ করলে নিয়োগদাতাকে শাস্তি ভোগ করতে হবে। কারখানা সম্পর্কিত কোনো বিচারের রায় বা সিদ্ধান্তে কোন পক্ষের অধিকার ক্ষুণ্ণ হয়েছে বা কোন পক্ষের প্রতি অবিচার করা হয়েছে বলে মনে করলে সংশ্লিষ্ট পক্ষ যাতে আপিল করতে পারে ফ্যাক্টরি আইন সে বিধান রেখেছে। ফ্যাক্টরিসমূহ তাদের আর্থিক বিবরণী নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের নিকট জমা দেওয়ার প্রক্রিয়ার বিষয়ে শাসন বিভাগ নিয়মকানুন প্রণয়ন করতে পারে।
কারখানার অথবা সেখানে কর্মরত শ্রমিকদের ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে এমন কোনো কাজের সাথে কোনো শ্রমিক সংযুক্ত পারবে না। ফ্যাক্টরি আইনে তার কোনো ধারা রহিত রাখা বা ক্ষেত্রবিশেষে বিকল্প ব্যবস্থার পথ বের করার জন্য সুযোগ রাখা হয়েছে এবং বলা হয়েছে যে, এ জাতীয় অবস্থায় কোন পদক্ষেপ নেওয়া হলে তাতে সাময়িক ব্যত্যয় ঘটলেও ফ্যাক্টরি আইন তার অন্যসব বিধান নিয়ে উদ্ভূত বিশেষ পরিস্থিতির কারণ ছাড়া সকল বিধান নিয়ে সম্পূর্ণভাবে বহাল থাকবে।
আরও দেখুন কর্মসংস্থান শ্রম অধিকার শিশুশ্রম তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ বাংলাপিডিয়া বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশের আইন |
Source: Toggle navigation বাংলাপিডিয়া প্রধান পাতা যেকোনো পাতা যোগাযোগ
ফ্যাক্টরি আইন ১৯৬৫ (১৯৩৪-এর ২৫নং আইন)
English ফ্যাক্টরি আইন ১৯৬৫
(১৯৩৪-এর ২৫নং আইন) কারখানায় শ্রমিক নিয়োগ, তাদের মজুরি এবং কাজের পরিবেশ, যথা স্বাস্থ্যকর ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কর্মস্থল, স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপত্তা, কল্যাণমূলক ব্যবস্থা, কর্মঘণ্টা, সাপ্তাহিক ও অন্যান্য সব ধরনের ছুটির সুযোগ এবং আইনভঙ্গের কারণে মালিক ও শ্রমিক উভয়ের জন্যই শাস্তি ও জরিমানা ইত্যাদি বিষয়ক আইন। পূর্ব পাকিস্তান ফ্যাক্টরি আইন ১৯৬৫ (১৯৬৫-এর পূর্ব পাকিস্তান আইন নং ৪) নামে এই আইন ১৯৬৫-এর সেপ্টেম্বরে ঢাকা গেজেট এক্সট্রা অর্ডিনারিতে প্রকাশিত হয়। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সরকার আইনটি গ্রহণ করে এবং সমগ্র দেশে তা কার্যকর হবে বলে ঘোষণা দেয়।
ফ্যাক্টরি আইনে ১১টি অধ্যায় এবং ১১৬টি বিভাগ আছে। আইনে তরুণ, বয়স্ক, শিশু, কর্মদিবস, বিস্ফোরক দ্রব্য, ফ্যাক্টরি, যন্ত্রসরঞ্জাম, উৎপাদন প্রক্রিয়া, দখলদার, মুখ্য চালিকা শক্তি, কাজের শিফট, মজুরি ইত্যাদি শব্দের সংজ্ঞা ও ব্যাখ্যা দেওয়া আছে। সরকার এই আইন ব্যবহারের যে ক্ষমতা সংরক্ষণ করে এবং প্রয়োজনে যেসব স্থান/প্রতিষ্ঠানকে এই আইনের আওতা থেকে অব্যাহতি দিতে পারে তার বর্ণনা আছে। বলা হয়েছে যে, সরকার কোন ফ্যাক্টরি উৎপাদন চালু করার পূর্বেই প্রধান পরিদর্শক বরাবর নোটিশ পাঠাতে পারেন এবং কোন ফ্যাক্টরি বছর ও নির্দিষ্ট ঋতুতে কতদিন চালু থাকে তার ভিত্তিতে তাকে মৌসুমি বলে ঘোষণা দিতে পারে। সকল ফ্যাক্টরিকেই প্রতিষ্ঠার পূর্বে তার জন্য প্রণীত পরিকল্পনা ও ডিজাইন অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে, প্রধান পরিদর্শকের দ্বারা তার ধরন ও বিবরণ অনুমোদিত হতে হবে এবং নির্ধারিত হারে লাইসেন্স ও নিবন্ধন ফিস দিতে হবে।
ফ্যাক্টরি আইনে সরকার কর্তৃক প্রধান পরিদর্শক, পরিদর্শক ও সনদ প্রদানকারী সার্জন-এর নিয়োগ সংক্রান্ত নিয়ম এবং শ্রমিকরা কর্মক্ষম কিনা তা প্রত্যয়নের পদ্ধতি লিপিবদ্ধ আছে। ফ্যাক্টরি আইন অনুসারে, প্রতিটি ফ্যাক্টরি এমনভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে যাতে তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে, এখানে যেন আশপাশের ড্রেনের পচা দুর্গন্ধ না থাকে এবং এর পরিবেশ নোংরা করতে পারে এমন কোন বিরক্তিকর বস্ত্তর অস্তিত্ব না থাকে। প্রতিটি ফ্যাক্টরিতে ময়লা ও বর্জ্য নির্গমনের পথ থাকতে হবে, ধুলা ও ধোঁয়া পরিষ্কার করার ব্যবস্থা থাকতে হবে, সব ঘরে যথাযথ বায়ু চলাচল ব্যবস্থা ও তাপমাত্রা রক্ষার ব্যবস্থা থাকতে হবে। সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী ফ্যাক্টরিতে পর্যাপ্ত আলো ও পানি সরবরাহের সুবিধা থাকতে হবে। ফ্যাক্টরি আইন সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করেছে যে, কোম্পানির শ্রমিক-কর্মচারীদের নিরাপত্তার জন্য অগ্নি দুর্ঘটনার সময় সহজে ফ্যাক্টরি থেকে বেরিয়ে যাবার পথ এবং দুর্ঘটনাপ্রবণ কলকব্জার চারপাশে নিরাপত্তা বেষ্টনী থাকা অবশ্য প্রয়োজন। কোন শ্রমিককে বিপজ্জনক কোন যন্ত্রে কাজে লাগানোর আগে তাকে যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়ে নিতে হবে। ক্রেন বা অন্যান্য ভারি মালামাল উত্তোলনের যন্ত্র, লিফট ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণের কলকব্জা খুবই ভালভাবে নির্মিত হতে হবে এবং এগুলি যাতে সহজে অকেজো না হয় ও দুর্ঘটনার কারণ না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। একইভাবে, ফ্যাক্টরির মেঝে বা প্রাঙ্গণে খানাখন্দক যাতে বিপদের কারণ না হয় সেজন্য সেগুলিকে সুচারুরূপে আচ্ছাদন দিয়ে রাখতে হবে। যেসব স্থানে প্রয়োজন সেখানে শ্রমিকদের চোখ রক্ষার জন্য কালো চশমা বা যথাযথভাবে তৈরি চোখের ঢাকনা সরবরাহ করতে হবে। প্রতিটি ফ্যাক্টরিতে টয়লেট ও গোসলের সুব্যবস্থা থাকতে হবে, এছাড়াও থাকতে হবে প্রাথমিক চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সকল উপকরণ ও ঔষধপত্র। কেন্টিন, বিশ্রাম কক্ষ ও শিশুদের কক্ষগুলি সুচারুভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে এবং যেসব কারখানায় শ্রমিক-কর্মচারীর সংখ্যা ৫০০-এর বেশি সেগুলিতে উপযুক্তসংখ্যক সমাজকল্যাণ কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে হবে।
ফ্যাক্টরি আইনে বলা আছে যে একজন প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিককে ফ্যাক্টরির কাজে সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করানো যাবে না, এবং অন্যভাবে নির্দেশিত না হলে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে তাকে কাজ থেকে অব্যাহতি দিতে হবে। বিকল্প সময়ে ছুটির ব্যবস্থা রেখে বাৎসরিক বিভিন্ন ছুটিতে কর্মচারীদের কাজ করানো যাবে। এছাড়া ফ্যাক্টরি আইনে, দৈনিক কর্মঘণ্টা, বিশ্রাম বা খাবারের জন্য বিরতি, কাজের সময় বণ্টন, রাতের শিফট বা একাধিক শিফটে কাজ, অতিরিক্ত কর্মঘণ্টা কাজের জন্য বাড়তি মজুরি, একসঙ্গে একাধিক চাকরিতে নিয়োগের ওপর নিষেধাজ্ঞা, কাজের মেয়াদ সংক্রান্ত নোটিশ এবং প্রাপ্ত বয়স্ক শ্রমিকদের নিবন্ধন সম্পর্কে বিস্তারিত বলা আছে। ফ্যাক্টরি আইন অনুযায়ী ১৪ বছরের কম বয়সের শিশুদের ফ্যাক্টরিতে নিয়োগ নিষিদ্ধ। কমবয়সী কিশোরদের, ফ্যাক্টরিতে নিয়োগ দিতে হলে তারা যে কর্মক্ষম এতদসংক্রান্ত একটি সনদপত্র লাগবে। এ ধরনের কিশোরদের জন্য কর্মসময় হচ্ছে দিনে সর্বোচ্চ পাঁচ ঘণ্টা এবং তাদের সন্ধ্যা ৭টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত সময়ে কোন অবস্থাতেই কাজ করানো যাবে না। প্রতিটি ফ্যাক্টরিতে কিশোরদের কর্মসময় সংক্রান্ত তালিকা টাঙানো থাকতে হবে, তাদের একটি রেজিস্ট্রারও সংরক্ষণ করতে হবে। ফ্যাক্টরিসমূহের পরিদর্শক প্রয়োজনে কিশোরদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে পারেন।
আইনের বিভিন্ন অংশে যেসব শর্ত ও পরিস্থিতি দেওয়া আছে সেই অনুযায়ী শ্রমিকদের নির্দিষ্ট কয়েক দিনের জন্য বার্ষিক সবেতন ছুটি নেওয়ার সুযোগ আছে। তারা উৎসব উপলক্ষে এবং নৈমিত্তিক ও চিকিৎসাজনিত ছুটি পেতে পারে। এছাড়াও শ্রমিকরা বিনা বেতনে কিছু ছুটি পেতে পারে। সরকারকে ফ্যাক্টরি শ্রমিকদের ছুটি-সংক্রান্ত সকল নিয়মাবলি প্রণয়নের অধিকার দেওয়া আছে। ফ্যাক্টরি আইনে ফ্যাক্টরিতে কোন ধরনের কাজ বিপজ্জনক সে সম্পর্কে ধারণা দেওয়া আছে এবং বিশেষ কিছু দুর্ঘটনা, বিপজ্জনক পরিস্থিতি ও বেশকিছু রোগব্যাধি সম্পর্কে নোটিশ প্রদানের বিধান আছে। আইনে নিয়োগদাতাদের শাস্তি ও জরিমানার কথা বলা আছে: যেমন, ফ্যাক্টরি পরিদর্শকের কাজে বাধা দিলে, ভুল বা ইচ্ছাকৃতভাবে সংকুচিত বা বিকৃত তথ্য দিলে এবং আইন ভেঙে শিশুশ্রমিক নিয়োগ করলে নিয়োগদাতাকে শাস্তি পেতে হবে।
ফ্যাক্টরি সম্পর্কে কোন বিচারের রায় বা সিদ্ধান্ত কোন পক্ষের অধিকার ক্ষুণ্ণ করেছে বা কোন পক্ষের প্রতি অবিচার করেছে বলে মনে হলে সংশ্লিষ্ট পক্ষ যাতে আপিল করতে পারে ফ্যাক্টরি আইন সে বিধান রেখেছে। ফ্যাক্টরিসমূহ তাদের আর্থিক বিবরণী কিভাবে নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের নিকট জমা দেবে সে বিষয়ে সরকার নিয়মকানুন প্রণয়ন করতে পারে। ফ্যাক্টরির কিংবা এখানে কর্মরত শ্রমিকদের ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে এমন কোন কাজে কোন শ্রমিক নিয়োজিত হতে পারে না। ফ্যাক্টরি আইন তার কোন ধারা রহিত রাখা বা বিশেষ পরিস্থিতিতে বিকল্প ব্যবস্থার পথ বের করার সুযোগ রেখেছে এবং বলা হয়েছে যে এ জাতীয় অবস্থায় কোন পদক্ষেপ নেওয়া হলে তাতে সাময়িক ব্যত্যয় ঘটলেও ফ্যাক্টরি আইন তার অন্যসব বিধান নিয়ে উদ্ভূত বিশেষ পরিস্থিতির কারণ ছাড়া সকল বিধান নিয়ে সম্পূর্ণভাবে বহাল থাকবে। [আবুল কালাম আজাদ]
' http://bn.banglapedia.org/index.php?title=ফ্যাক্টরি_আইন_১৯৬৫_(১৯৩৪-এর_২৫নং_আইন)&oldid=17707 ' থেকে আনীত লুকানো বিষয়শ্রেণী: বাংলাপিডিয়া
এই পাতা শেষ সম্পাদিত হয়েছে ০৫:২৮টার সময়, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে।
গোপনীয়তার নীতি বাংলাপিডিয়া বৃত্তান্ত দাবিত্যাগ প্রবেশ করুন |